
গাংনীতে পারিবারিক কলহের জেরে জামাইয়ের হাতে চাচা শ্বশুর খুন
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় পারিবারিক কলহের জেরে জামাইয়ের ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন ইলিয়াস হোসেন (৫০) নামের এক চাচা শ্বশুর। বৃহস্পতিবার (৮ মে) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার গাঁড়াবাড়ীয়া গ্রামে এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড ঘটে।
নিহত ইলিয়াস হোসেন একই গ্রামের মৃত নেককার আলীর ছেলে। অভিযুক্ত ঘাতক সবুজ হোসেন (৩৫) গাংনী উপজেলার ষোলটাকা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য ময়নাল হকের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত ইলিয়াসের ভাতিজিকে বিয়ের পর থেকেই মাদকাসক্ত স্বামী সবুজ নির্যাতন করে আসছিলেন। সম্প্রতি স্ত্রীকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিলে তিনি বাবার বাড়িতে ফিরে আসেন। এই বিষয়কে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার ভোরে চাচা শ্বশুর ইলিয়াস হোসেনের বাড়িতে এসে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে সবুজ। একপর্যায়ে কোমরে রাখা ধারালো ছুরি দিয়ে ইলিয়াসকে উপর্যুপরি আঘাত করে সে। চিৎকার শুনে ইলিয়াসের ভাতিজা আব্দুল্লাহ ঠেকাতে গেলে তাকেও ছুরিকাঘাত করে সবুজ।
আব্দুল্লাহ জানান,
“সবুজ দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত এবং নেশার টাকার জন্য প্রায়ই আমার বোনকে নির্যাতন করত। তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার পর আমার বোন আমাদের বাড়িতে চলে আসে। আজ ভোরে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে আমার চাচাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। আমি তাকে থামাতে গেলে আমাকেও আঘাত করে। আমি এই খুনির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন তৎপর হয়ে সবুজকে ধরে ফেলে এবং পুলিশকে খবর দেয়। পরে গাংনী থানা পুলিশ, স্থানীয় ক্যাম্পের সদস্য ও সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘাতক সবুজকে আটক করে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বানী ইসরাইল বলেন,
“আমরা খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে মেহেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।”
নিহত ইলিয়াস হোসেনের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।