
মেহেরপুর, ১৯ এপ্রিল ২০২৫:
জেলা প্রশাসনের নীতির প্রতি তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মেহেরপুর জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। তাঁদের অভিযোগ—বর্তমান জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজের “ভঙ্গুর নীতি, দায়িত্বহীনতা ও ভয়ভীতির মানসিকতা” মেহেরপুরের সামগ্রিক অগ্রগতিতে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে প্রশাসনের সিদ্ধান্তহীনতা ও নতজানু মনোভাবের কারণে ক্রীড়া, শিক্ষাসহ একাধিক সেক্টরে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা।
নেতারা উল্লেখ করেন, দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে একটি গোষ্ঠী রাজনৈতিকভাবে জিম্মি করে রেখেছে। এ সময়টায় নিয়মিত কোনো খেলাধুলা বা প্রতিযোগিতার আয়োজন হয়নি। তবে একটি সংস্কারধর্মী এডহক কমিটি গঠিত হওয়ার পর অনেকেই আশান্বিত হয়েছিলেন। এই কমিটি নতুন করে প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ আয়োজনের মাধ্যমে মেহেরপুরের ক্রীড়াঙ্গনকে জাগিয়ে তুলতে চায়। কিন্তু ছাত্রনেতাদের দাবি—জেলা প্রশাসকের গড়িমসি ও অনুমোদনে বিলম্বের কারণে সেই উদ্যোগও ভেস্তে যেতে বসেছে।
শুধু ক্রীড়া নয়, পূর্বে কৃষি ও বাজার ব্যবস্থাপনার সেক্টরেও জেলা প্রশাসকের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। ছাত্রনেতারা জানান, তারা সারের ডিলারদের অনিয়ম, অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, এবং অবৈধ মজুতদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে প্রশাসনের কাছে গিয়েছিলেন। প্রাথমিকভাবে অভিযান শুরু হলেও কিছুদিন পর “অদৃশ্য চাপের” কাছে নতিস্বীকার করে প্রশাসন সরে আসে, এবং অনিয়ম আবারও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ও সচেতন তরুণদের দাবি—বর্তমান সময়ে মেহেরপুরের মানুষের মাঝে পরিবর্তনের প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক অভ্যুত্থান নতুন এক আন্দোলনের জন্ম দিয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের দিক থেকে সহযোগিতা না পেলে সাধারণ মানুষ হতাশ হবে এবং জনমনে প্রশাসনের প্রতি আস্থাহীনতা তৈরি হবে।
একজন ছাত্রনেতা বলেন, “প্রশাসনের দায়িত্ব হলো জনস্বার্থ রক্ষা করা। কিন্তু যখনই দেখা যায় প্রশাসন দুর্নীতিবাজদের সুরক্ষা দিচ্ছে কিংবা গড়িমসি করছে, তখন আমাদের বলতেই হয়—উন্নয়নের পথে কে বাধা দিচ্ছে? দুর্নীতি না প্রশাসনের অক্ষমতা?”
তাঁরা আরও জানান, প্রশাসনের এমন ভূমিকায় জেলাবাসীর মধ্যে এক ধরনের অসন্তোষ জন্ম নিচ্ছে এবং সময়মতো সংশোধন না হলে মেহেরপুরের মানুষ প্রশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতেও পিছপা হবে না।