
দেশের রাজপথে নয়, এবার ফেসবুকের ওয়ালে হরতাল! একবিংশ শতাব্দীর যুগান্তকারী রাজনীতির ধারায় নতুন মাত্রা যোগ করলো পতিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ১৮ ফেব্রুয়ারি তারা ঘোষণা দিয়েছিল এক ‘অসহযোগ হরতাল’, যা মূলত বাস্তবের চেয়ে ভার্চুয়াল দুনিয়াতেই বেশি প্রভাব বিস্তার করেছে।
হরতালের দিন দেখা যায়, রাস্তা-ঘাট ছিল একদম স্বাভাবিক, দোকানপাট খোলা, যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন। কিন্তু ফেসবুক? ওহ! সেখানেই চলছিল হরতালের আসল প্রতিচ্ছবি! ফেসবুকের ‘#হরতাল’, ‘#স্বতঃস্ফূর্ত’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে পোস্টের বন্যা বয়ে যায়, যেন ডিজিটাল বাংলাদেশে রাজনীতির নতুন অধ্যায় রচিত হলো।
“রাস্তা ফাঁকা!” কিন্তু আসলে কেন?
হরতাল সফল দাবি করতে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ফেসবুক পেজ থেকে রাস্তার ফাঁকা ছবি পোস্ট করা হয়। তবে জনসাধারণের দাবি, ছবিগুলো ছিল ভোরবেলার কিংবা নির্মাণাধীন রাস্তার, যা সাধারণত এমনিতেই ফাঁকা থাকে। একজন ক্ষুব্ধ নেটিজেন লিখেছেন,
“এই হরতাল কি সকাল ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে শেষ হয়ে গেছে? কারণ এরপর আমি বাজারে গিয়ে প্রচুর ভিড় দেখেছি!”
রাজনৈতিক কর্মীদের ‘বাহিরে বের হওয়ার দরকার নেই’ নীতি!
বিশ্লেষকদের মতে, আওয়ামী লীগের কর্মীদের অনেকেই হরতালের দিন বাসা থেকে বের হননি। তবে এর কারণ রাজনৈতিক সচেতনতা নয়, বরং তারা ব্যস্ত ছিলেন ফেসবুকে ‘হরতাল সফল’ ঘোষণা দিতে। কেউ কেউ ‘হরতাল পালনরত’ অবস্থায় ফেসবুকে লাইভও চালু করেন। কিন্তু ভুলবশত ক্যামেরায় ধরা পড়ে পাশে টিভিতে চলছে তুরস্কের জনপ্রিয় সিরিজ ‘সুলতান সুলেমান’!
‘হরতাল-গ্রুপ’ এবং ফেসবুক রিঅ্যাকশন বাহিনী
একদল কর্মী নতুন নতুন ফেসবুক গ্রুপ খুলে সেখানে ‘হরতালের সাফল্য’ নিয়ে পোস্ট দিতে থাকেন। অন্যদিকে, কিছু মানুষ বিরোধিতা করতে গিয়ে এতটাই রিঅ্যাকশন দেয় যে, ফেসবুকের অ্যালগরিদম হরতালের প্রচারণাকে আরও উঁচুতে নিয়ে যায়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই নতুন ধারার ভার্চুয়াল হরতাল রাজনীতিতে এক নতুন যুগের সূচনা করতে পারে। আগামীতে নির্বাচনও যদি শুধুমাত্র ফেসবুক ইভেন্টের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়, তবে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না!