গাংনীতে শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করতে রাতের আঁধারে হোম ভিজিট করছেন ইউএনও প্রীতম সাহা

গাংনীতে শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করতে রাতের আঁধারে হোম ভিজিট করছেন ইউএনও প্রীতম সাহা

এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের পড়াশোনার খোঁজখবর নিতে রাতের আঁধারে শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) প্রীতম সাহা। শিক্ষার প্রতি তার এই অঙ্গীকার উপজেলায় শিক্ষার মানোন্নয়নে এক ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই প্রীতম সাহা শুধু প্রশাসনিক কাজেই সীমাবদ্ধ থাকেননি, বরং শিক্ষার মানোন্নয়নে একাধিক কার্যক্রম গ্রহণ করেছেন। তারই অংশ হিসেবে তিনি শুরু করেছেন ‘সান্ধ্যকালীন হোম ভিজিট’ কার্যক্রম।

মার্চ মাসের শুরু থেকেই প্রতিদিন রাত ৮টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তিনি উপজেলার বিভিন্ন এলাকার এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার্থীদের বাড়িতে যাচ্ছেন। তার উদ্দেশ্য হলো—

✔ শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতির খোঁজ নেওয়া

✔ তাদের পড়াশোনায় মনোযোগী করে তোলা

✔ অভিভাবকদের সঙ্গে মতবিনিময় করা ও দিকনির্দেশনা দেওয়া

 

হোম ভিজিটকালে ইউএনও প্রীতম সাহা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন, তাদের পড়াশোনার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করেন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন। শুধু তাই নয়, শিক্ষার্থীদের মাঝে তিনি শিক্ষা উপকরণ ও উপহার সামগ্রীও বিতরণ করছেন, যা তাদের জন্য বাড়তি অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করছে।

একজন শিক্ষার্থী জানান,

“ইউএনও স্যারের উপহার এবং উৎসাহে আমরা অনেক অনুপ্রাণিত হয়েছি। এখন পড়াশোনায় আরও মনোযোগ দিচ্ছি।

এই উদ্যোগে অভিভাবকরা যেমন স্বস্তি প্রকাশ করেছেন, তেমনি শিক্ষকদের মাঝেও আনন্দের সঞ্চার হয়েছে।

একজন অভিভাবক বলেন,

“ইউএনও স্যার আমাদের বাসায় এসে সন্তানদের পড়ালেখার খোঁজ নিয়েছেন, এটা আমাদের জন্য গর্বের ও আনন্দের বিষয়। এতে আমরা যেমন উৎসাহিত হয়েছি, তেমনি সন্তানরাও আরও মনোযোগী হচ্ছে।”

গাংনী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে মোবারক বলেন,

“ইউএনও মহোদয়ের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। তার সান্ধ্যকালীন হোম ভিজিট কার্যক্রম অত্যন্ত প্রশংসনীয়।”

প্রীতম সাহা বলেন,

“আমাদের লক্ষ্য শুধু প্রশাসনিক দিক নয়, শিক্ষাক্ষেত্রেও একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আনা। এই উদ্যোগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মনিটরিং, উৎসাহ প্রদান এবং শিক্ষার প্রতি মনোযোগ বৃদ্ধিই আমাদের উদ্দেশ্য। আমাদের শিক্ষার্থীরা যদি বইমুখী হয়, নিয়মিত পড়াশোনা করে, তাহলে তারা ভবিষ্যতে আরও ভালো করবে। এ কার্যক্রম চলমান থাকবে এবং ভবিষ্যতে আরও সম্প্রসারিত হবে।”

গাংনী উপজেলার সচেতন মহল, অভিভাবক, শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তারা মনে করেন, এ রকম উদ্যোগ অব্যাহত থাকলে আগামী দিনে গাংনী উপজেলায় শিক্ষার মান উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে।

Related

মাদকবিরোধী অভিযানে ‘ফরহাদ হোসেন’ এর দণ্ড

মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি নীলকুঠিপাড়া এলাকায় মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান চালিয়ে হেরোইনসহ ফরহাদ হোসেন (২০) নামের এক যুবককে হাতেনাতে আটক করেছে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টার…

একসময় পোশাক কারখানায় কাজ করতেন, এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের অফিসার

এইচএসসি পাস করার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য যে পরীক্ষা দিতে হয়, এ বিষয়ে কোনো ধারণা ছিল না লালমনিরহাটের পাটগ্রামের মো. মিঠু আলমের। তাই এইচএসসি পাসের পর ২০১৩ সালে চাকরির উদ্দেশে…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *