
মেহেরপুরে ঈদের দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩, শোকে মাতম
৩১ই মার্চ ২০২৫ | মেহেরপুর
পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিনে মেহেরপুর শহরের উপকণ্ঠে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন তিনজন। এ ঘটনায় আরও দুজন আহত হয়েছেন। সোমবার বিকেলে ব্রিটিশ-আমেরিকা-টোবাকো বাংলাদেশ দ্বিতীয় অফিসের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন:
- আখতারুজ্জামান (২৪), মেহেরপুর সদর উপজেলার উজলপুর গ্রামের হাসানুজ্জামানের ছেলে।
- আল ইমরান (২৩), মেহেরপুর সদর উপজেলার বাড়িবাঁকা গ্রামের মোখলেছুর রহমানের ছেলে।
- জুবায়ের হোসেন (১০), গাংনী উপজেলার ধানখোলা গ্রামের আলী হাসানের ছেলে।
আহতরা হলেন:
- আলী হাসান (৪০), ধানখোলা গ্রামের নবীছউদ্দিন মণ্ডলের ছেলে।
- সাজ্জাদ হোসেন পলাশ (৩৫), গাংনীর গাড়াবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাজ্জাদ হোসেন পলাশ (ঢাকা মেট্রো-ঘ ১১-৮৪৯৭ নম্বরের একটি জিপ গাড়ি চালিয়ে) মেহেরপুরের দিকে আসছিলেন।
একই সময়ে আলী হাসান তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ভ্যান চালিয়ে আমঝুপির দিকে যাচ্ছিলেন।
ব্রিটিশ-আমেরিকা-টোবাকো অফিসের সামনে জিপটি ভ্যানটিকে সজোরে ধাক্কা দেয়, এতে ভ্যানচালক ও যাত্রীরা ছিটকে পড়েন।
এ সময় আখতারুজ্জামান ও তার বন্ধু আল ইমরান মেহেরপুর-ল ১১-৭৯৯০ নম্বরের মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
জিপ গাড়িটি তাদের মোটরসাইকেলকেও ধাক্কা দেয়, ফলে দুজনই রাস্তায় ছিটকে পড়েন। এর পরপরই জিপটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মেহেরপুর প্রবেশদ্বারের পিলারের সঙ্গে ধাক্কা খায়।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে মেহেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।
সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক আখতারুজ্জামানকে মৃত ঘোষণা করেন।
আল ইমরান ও জুবায়েরের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।
পথিমধ্যে ঈশ্বরদী হাসপাতালে মারা যায় শিশু জুবায়ের।
কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরপরই আল ইমরানের মৃত্যু হয়।
একই দিনে তিনটি মৃত্যুর ঘটনায় মেহেরপুর সদর উপজেলার বাড়িবাঁকা, উজলপুর এবং গাংনী উপজেলার ধানখোলা গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
নিহতদের পরিবারে চলছে মাতম, ঈদের আনন্দ মুহূর্তেই বিষাদে পরিণত হয়েছে।
এদিকে, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে কাজ শুরু করেছে।
জিপ চালক সাজ্জাদ হোসেন পলাশের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়েও আলোচনা চলছে।
সড়ক দুর্ঘটনার কবল থেকে দেশকে মুক্ত রাখতে সবার সচেতনতা জরুরি – বলছেন বিশেষজ্ঞরা।